User-agent: Mediapartners-Google User-agent: Google-Display-Ads-Bot

মহিউদ্দিন মাহতাব : পূর্ণ নিরাপত্তার নিশ্চয়তা, জীবনঝুঁকি থেকে সুরক্ষা এবং হামলা বা প্রতিশোধমূলক পদক্ষেপ না নেওয়ার প্রতিশ্রুতি—এগুলোই রাজনৈতিক নির্বাসন বা আশ্রয়প্রাপ্ত কোনো নেতার দেশে ফেরার ক্ষেত্রে আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত পূর্বশর্ত। একইভাবে, ন্যায্য বিচার প্রক্রিয়া নিশ্চিত করা, রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত মামলা না করা, এবং মানবাধিকার মানদণ্ড অনুযায়ী আচরণের বাধ্যবাধকতা—এগুলোও লিখিতভাবে নিশ্চিত করতে হয়।
ব্যাপারটি এখানে দাঁড়িয়েছে—তারেক রহমানের বিরুদ্ধে থাকা ৮৪টি মামলার মধ্যে প্রায় ১৮–১৯টি রেখে বাকি সব থেকে তাকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে। এর বিপরীতে, ড. ইউনুস সম্পূর্ণভাবে তার মামলাগুলো থেকে অব্যাহতি পেয়েছেন। তারেকের ক্ষেত্রে এই আংশিক অব্যাহতি—এমনভাবে পরিকল্পিত, যা তার প্রত্যাবর্তনের পথকে আইনগতভাবে জটিলই রেখে দেয়। এটি নিছক ঘটনাচক্র নয়; বরং একটি সুক্ষ্ম কৌশল, যার লক্ষ্য তার দেশে ফেরার পথ নিয়ন্ত্রিত রাখা।
//তারেক রহমান বলেছেন যে তার বাংলাদেশে ফেরার সিদ্ধান্ত সম্পূর্ণভাবে তার একক নিয়ন্ত্রণে নয়, বরং এটি দেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতির উন্নতির ওপর নির্ভরশীল। //
অন্যদিকে, শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে ফাঁসির আদেশ—যা আন্তর্জাতিক মহলে বিস্ময় তৈরি করেছে—এতো দ্রুত ও বিস্ময়করভাবে কোনো রাষ্ট্রনায়কের বিরুদ্ধে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া বিশ্ব-ইতিহাসেও বিরল। সামগ্রিক চিত্রে স্পষ্ট: হাসিনা এবং তারেক—দু’জনকেই দেশের বাইরে রাখা এবং ক্ষমতার বলয় থেকে শেখ পরিবার ও জিয়া পরিবারকে সমানভাবে বাইরে ঠেলে দেওয়ার একটি বৃহৎ পরিকল্পনা বহুদিন ধরেই বাস্তবায়িত হচ্ছে।
//যুক্তরাজ্যভিত্তিক মানবাধিকার সংস্থাটির দাবি, শেখ হাসিনাকে ঢাকার আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের দেয়া ফাঁসির রায় ‘সুষ্ঠু ও ন্যায়সঙ্গত’ হয়নি।//
এই বাস্তবতার আলোকে ধারণা করা অস্বাভাবিক নয় যে, তারেক জিয়া এই বৃহৎ কৌশলটি অনুধাবন করেছেন। এমনকি সম্ভাবনা আছে—রাষ্ট্র ও জাতির ঝুঁকি উপলব্ধি করে, শেখ হাসিনা ও তারেক হয়তো নীরবে একটি ন্যূনতম সমঝোতা বা বোঝাপড়ার পথে হাঁটছেন। কারণ তারা দু’জনই জানেন—যদি নেতৃত্বশূন্যতার এই প্রক্রিয়া অব্যাহত থাকে, রাষ্ট্রের সর্বাত্মক বিপর্যয় কেবল সময়ের অপেক্ষা।
এ প্রেক্ষাপটে বলা—“হাসিনা দেশে ফিরতে না পারে, সেই ব্যবস্থা করা হয়েছে, অথচ বলা হচ্ছে ‘ভারত দিচ্ছে না’”—এটি বরফের চূড়ামাত্র। বাস্তবে, দু’জন নেতার প্রত্যাবর্তন রোধে দীর্ঘদিন ধরে অত্যন্ত পরিকল্পিত, সুক্ষ্ম এবং পর্দার আড়ালের রাজনৈতিক ও কূটনৈতিক কর্মযজ্ঞ চালানো হয়েছে। রাজনৈতিক আশ্রয় কাঠামোকে কেন্দ্র করে এমন সব সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে, যা তাদের ফেরা কঠিন করে তোলে। অর্থাৎ, তাদের প্রত্যাবর্তন যাতে রাজনৈতিক ভারসাম্য বা ক্ষমতার সমীকরণে প্রভাব ফেলতে না পারে—সেই উদ্দেশ্যে সব ব্যবস্থা সুচারুভাবে বাস্তবায়িত হয়েছে।
Leave a Reply